লন্ডনে দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা এবং সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উৎসব

বিগত একযুগের ধারাবাহিকতায় এবারও লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুই দিনব্যাপী দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব। সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য এর আয়োজনে প্রতিবছরের মতো এবারও ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর শনি ও রবিবার পূর্ব লন্ডনের মাইল্যান্ড পার্কের দ্যা আর্ট প্যাভিলিয়নে প্রতিদিন দুপুর ১.৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বইমেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।
অন্যান্য বছরের ন্যায় এববারও বাংলাদেশের কয়েকটি প্রকাশনী সংস্থা মেলায় যোগ দেয়। যুক্তরাজ্যের বই মেলাকে কেন্দ্র করে এবছর এ পর্যন্ত প্রবাসী লেখকদের ১৫টির অধিক বই প্রকাশিত হয়েছে।
মেলার আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ বলেন, এবছরও ইউরোপ, আমেরিকা থেকে অতিথিগণ বই মেলায় যোগ দিয়েছেন। ভিসা জটিলতার কারণে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা ও অতিথিরা আসতে পারেননি।
সংগঠনের সভাপতি কবি, লেখক ময়নূর রহমান বাবুল বলেন, বাংলাদেশের অমর একুশের বই মেলার পরে লন্ডনের এই বই মেলা আমার জানা মতে দ্বিতীয় বৃহৎ বইমেলা হিসাবে পরিচিত। এই বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ১৫/২০টি বই এবং ২/৩টা সংকলন, লিটলম্যাগ প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে প্রবাসী লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের জন্য একটা বিশাল ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আমরা সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ এই ক্ষেত্রটা যে কোন মূল্যে ধরে রাখতে চাই। বাংলা শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রবাসে আমাদের আত্মপরিচয়ের সংযোগ স্থাপনের এক বড় মাধ্যম। প্রবাসে আমাদের জন্য অক্সিজেন হিসাবে কাজ করে এই আয়োজন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের পর তৃতীয় বাংলা খ্যাত লন্ডনে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কর্মকা-ে নিয়োজিত সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সেতুবন্ধন রচনা করে এই বহুজাতিক সমাজে বাংলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারকে আরো বেগবান করতে ২০০৯ সালে প্রথম গঠিত হয় সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ। প্রতিষ্ঠার মাত্র এক বছরের মাথায় ২০১০ সালের ১১-১২ ও ১৩ জুলাই পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে আয়োজন করা হয় তিন দিনব্যাপী প্রথম বাংলা একাডেমি বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব। তখন থেকে শুরু হয় লন্ডনে বই মেলার।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর লন্ডন সময় বিকাল ৩টায় মাইল এন্ড পার্কের দ্য আর্ট প্যাভিলিয়ন সেন্টারে বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রখাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক কবি শামিমা আজাদ। এবারের মেলায় মোট ১৪টি বইয়ের স্টল ছিল। বই মেলায় কেউ নৃত্য, কেউ কবিতা আবৃত্তি, কেউবা আবার স্বরচিত কবিতা পাঠ করছেন। এবারের সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য সাহিত্য পদক লাভ করেন কবি ফারুক আহমেদ রনি।