সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বিশ্বনাথে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী খুন কবি সিরাজুল হকের মৃত্যুতে পোয়েটস্ ক্লাবের শোক প্রকাশ চৌহাট্টায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মৃত্যু বেসামাল ‘নেত্রী’ সিলেটের আরজু আটক সিলেটে র‍্যাবের খাচায় আলোচিত আ.লীগ নেত্রী আরজু,এখনও অধরা যুব মহিলা লীগ নেত্রী লাকি! শান্তিগঞ্জে ভূমিখেকোদের বিরুদ্ধে প্রাঃ স্কুল মাঠ থেকে অবৈধভাবে মাঠি উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান মানবাধিকার ও অনুসন্ধান কল্যাণ সোসাইটির নতুন কমিটি গঠন স্বর্নালী সাহিত্য পর্ষদ কুয়েত শাখার সভাপতি ও চ্যানেল থ্রি এর কুয়েত প্রতিনিধি লিটন আমিন সংবর্ধিত সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকছে নানা আয়োজন

সিলেট চেম্বারে কী আসলেই নির্বাচন হয়েছিল?

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৬২ পরিদর্শন
আপডেট : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সিলেটের ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন ‘সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’। প্রতি দুইবছর পর পর উৎসবমূখর পরিবেশে জেলার ব্যবসায়ীরা সরাসরি ব্যালটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে থাকেন। কিন্তু চলতি বছর ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি ব্যবসায়ীরা। ‘সমঝোতা’ করে কমিটি করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার ভোটাধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা সমঝোতার গোপন কমিটি বাতিল করে প্রশাসকের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটার তালিকার মাধ্যমে সিলেট চেম্বারের নির্বাচন দাবি করছেন।
তবে চেম্বারের দায়িত্বশীলরা বলছেন, কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যক্তি স্বার্থে কমিটি বাতিলের দাবি তুলছেন। অথচ দাবি উত্থাপনকারী ওই ব্যবসায়ীরা অন্য যেসব ব্যবসায়ী সংগঠনে প্রতিনিধিত্ব করছেন সেগুলোতে কখনো নির্বাচন হয় না। এগুলো নিয়ে তারা কখনো প্রশ্ন তুলেন না।

আর চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু বলছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সকল মতের ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে বসে ‘সমঝোতার’ মাধ্যমেই কমিটি হয়েছে। যারা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যেও সমঝোতার উদ্যোক্তা ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট চেম্বারের ২০২৪-২৬ মেয়াদের কমিটি গঠন করা হয় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি। ওই সময় নির্বাচিত পর্ষদ দাবি করেন, ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তিন ক্যাটাগরির ২৩ পদে একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়ায় সবাইকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

চেম্বারের কমিটি ঘোষণার পর থেকে সিলেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেকে অভিযোগ তুলেন, নির্বাচন ছাড়াই গোপনে কমিটি করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভোটাধিকার বঞ্চিত করে নেতারা পদ বাগিয়ে নিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলেন ব্যবসায়ীরা।

নির্বাচিতরা তফশিল ঘোষণার দাবি করলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ছিল তারা নির্বাচনের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। এমনকি প্রতিবার নির্বাচনী তফশিল স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে ফলাও করে প্রচার করা হলেও তা করা হয়নি। কিন্তু চেম্বারে রাজনীতির নেপথ্যে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা জড়িত থাকায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ খুব জোরালো হয়নি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ব্যবসায়ীরা সিলেট চেম্বারের ‘গোপন কমিটি’ বাতিল করে ভোটের মাধ্যমে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নির্বাচনের দাবি তুলেন। এনিয়ে তারা চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করেন। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি।

এরপর থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন, মতবিনিময় ও স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ও সহসভাপতিসহ পাঁচ পরিচালক পদত্যাগ করেন। চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদ অসুস্থতা দেখিয়ে দায়িত্ব পালনে অপরাগতা প্রকাশ করে পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন।

কিন্তু তাতেও ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ কমেনি। তারা এখনো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর তারা চেম্বারের কমিটি বাতিল ও প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যান পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান রিপন বলেন, প্রতি দুইবছর পর পর ব্যবসায়ীরা ভোটের মাধ্যমে চেম্বারে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। নির্বাচন ঘিরে সিলেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু বর্তমান পরিষদ ব্যবসায়ীদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাচন ছাড়াই গোপনে কমিটি করেছেন। ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ করছেন। ব্যবসায়ীরা বর্তমান কমিটি বাতিল করে প্রশাসকের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটার তালিকার মাধ্যমে নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চান।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু বলেন, আবদুর রহমান রিপন ব্যবসায়ীদেরকে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি সিলেট চেম্বারের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কর্মসুচি দিলেও তিনি কখনো মেট্রোপলিটন চেম্বার ও ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যান পরিষদে নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন না। অথচ এ দুই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি।
মিন্টু বলেন, চেম্বারের নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রায় একই সময়ে ছিল। তাই এই সময় সমঝোতার মাধ্যমে সব দলের মতাদর্শীদের নিয়ে নির্বাচন ছাড়াই কমিটি হয়েছিল। যে ৫ পরিচালক পদত্যাগ করেছেন তারাও এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন। তবে এখনো সুযোগ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের। চেম্বার ভবন ঘেরাও আর জোরজবরদস্তি ব্যবসায়ীসুলভ আচরণ নয়।

এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, ‘সিলেট চেম্বারের কমিটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা বলছেন আবদুর রহমান রিপন। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। সিলেট চেম্বারের নির্বাচন নিয়ে তিনি আন্দোলন করছেন, অথচ তিনি অন্য যেসব সংগঠনের সাথে জড়িত সেগুলোতে কখনোই নির্বাচন হয় না। কিন্তু তিনি ওই সংগঠনগুলোর ব্যাপারে নিশ্চুপ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপন সিলেট চেম্বার নিয়ে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরোও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর