১৭ বছর পর নিজ মাতৃভূমিতে ফিরছেন ডা. জোবায়দা রহমান বেগম খালেদা জিয়াকে বরণ করতে প্রস্তুত সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দীর্ঘ চার মাস পর লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দুই পুত্রবধুকে সাথে নিয়ে দেশে ফিরছেন সাবেক তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন থেকে সিলেট হয়েই ঢাকায় ফিরবেন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তাঁরই দুই পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমান ও শর্মিলা রহমান। এর মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধু সিলেটের কৃতি সন্তান ডা. জোবায়দা রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর শাশুড়ির সাথে নিজ জন্মভূমিতে ফিরছেন। দলীয় প্রধান ও সিলেটকন্যা ডা, জোবায়দা রহমানের সিলেট হয়ে ঢাকায় ফেরা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছাস সৃষ্টি হয়েছে। দলের চেয়ারপার্সন ও সিলেটের কৃতি সন্তান ডা. জোবায়দা রহমান সহ জিয়া পরিবারের সদস্যদের সিলেট বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা দলটির নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, প্রিয়নেত্রীকে স্বাগত জানতে সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন সিলেট বিভাগ বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী সহ সর্বস্থরের সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যে সিলেট বিভাগ বিএনপি, সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়ে দলীয় চেয়ারপার্সনকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে।
সিলেট বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার সিলেট হয়ে ঢাকা ফেরার বিষয়টি সামনে রেখে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে দল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং সর্বস্তরের মানুষকে আগামী সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে বিমানবন্দরের সামনে উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরলেও এখানে কোনো সভা কিংবা সমাবেশে অংশ নেবেন না। বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটের সিলেটের যাত্রীদের নামিয়ে বিমানটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। এ সময় প্রায় ঘণ্টাখানেক খালেদা জিয়া সিলেটের বিমানবন্দরে অবস্থান করবেন। সেখানে অবস্থানকালে সিলেটে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে তাঁরা উপস্থিত নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন ও খালেদা জিয়ার বার্তা পৌঁছে দেবেন।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ জানান, ম্যাডাম অসুস্থ তাই সিলেটে নামবেন না, কোন কর্মসূচিও নেই। তার পরও দলের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরে প্রিয়নেত্রীকে অভ্যার্থনা জানাবেন। ম্যাডমের সাথে সিলেটের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মনী ও কৃতি সন্তান ডা. জোয়বায়দা রহমানও দেশে ফেরার খবরে নেতাকর্মীদেও মাঝে বাড়তি উচ্ছাস তৌরি হয়েছে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, দীর্ঘদিন পর সিলেটের মাটি স্পর্শ করবেন আমাদের নেত্রী। এটা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের প্রাণিত করেছে। নিজেদের ভালো লাগার এই মুহূর্ত ও অনুভূতিটুকু আরও আনন্দময় করতে সবাই বিমানবন্দরের সামনে জড়ো হবেন। প্রিয়নেত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সিলেটবাসী।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, ম্যাডাম সুস্থ হয়ে দেশে ফিরছেন এটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। আর এই আনন্দের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে আমাদের বোন ও সিলেটর কৃতি সন্তান ডা. জোবায়দা রহমানের দেশে ফেরার খবরে। সিলেটের সর্বস্থরের মানুষ ম্যাডাম ও ডা. জোবায়দা রহমানকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতনের পর চলতি বছরের গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছেই লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত¡াবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় তাদের অধীনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পরে এবারই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেন বাংলাদেশর ইতিহাসের সবচেয়ে সফল গণতন্ত্রকামী নেত্রী খালেদা জিয়া।